সাগরবেলার ঘর


Authors / Editors : Priyanka Ghosh ★

Dec 2024



 


Reader's Reviews

উপন্যাসটি একবার পড়তে শুরু করলে, শেষ না করে ওঠা যায় না। পরিবেশনার আঙ্গিকটিও নতুন ভাবরসে সিক্ত।
Show/hide complete review

কয়েক দিন আগেই ভ্রমণ করে এলাম ব্রাইটন শহর। সাগরবেলায় শ্রুতি-সায়নের হাত ধরে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম, তা এককথায় অনবদ্য। লেখিকা প্রিয়াঙ্কা ঘোষের লেখা “সাগরবেলার ঘর" উপন্যাসের মাধ্যমে আমার এই মানস ভ্রমণ সম্ভব হয়েছে। যে সাবলীল ভঙ্গিতে প্রিয়াঙ্কা উপন্যাসটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যে তার প্রাপ্তির ঝুলি প্রশংসার প্রাচুর্যে ভরিয়ে দিলাম আমি। এই উপন্যাসটি একবার পড়তে শুরু করলে, শেষ না করে ওঠা যায় না। এই উপন্যাসের পরিবেশনার আঙ্গিকটিও নতুন ভাবরসে সিক্ত। উপন্যাসের প্রধান দুই চরিত্র শ্রুতি এবং সায়ন দুজনেই তাদের দিনযাপনের ডাইরি লিখছে। আর সেই লেখা থেকেই পাঠক জানতে পারছে, তাদের অনুভূতির কথা। পড়তে পড়তে মনে হয়, এই শ্রুতি-সায়নকে কত কাছ থেকে দেখা। এরা যেন আমার আত্মার আত্মীয়। এদের অনুভূতির স্রোতে ভেসে গেলাম আমি। শ্রুতি- সায়নের সম্পর্ককে কোনো নাম দেওয়া যায় না। এ এক অপার্থিব সম্পর্ক, যা পরিণতি পেতেও পারে, নাও পেতে পারে। তাই উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে, এরপর কী হবে? এই ব্যাকুলতা বাড়তেই থাকে। কিন্তু--- এই কিন্তুর জন্য প্রিয়াঙ্কা ঘোষের লেখা “সাগরবেলার ঘর" উপন্যাসটি সবাইকে পড়তে অনুরোধ করছি। প্রিয়াঙ্কার লেখায় এমন এক জাদু আছে, যা পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে রেখে যায় অনাবিল আনন্দ। এই উপন্যাসটি প্রত্যেক পাঠকের মন জয় করবে, এ আমার বিশ্বাস। পরিশেষে প্রিয়াঙ্কাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ, এইরকম মনোগ্রাহী একটি বই আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য। আর রইল অপরিমেয় ভালোবাসা, যা তার প্রাপ্য।

মৌসুমী ঘটক
নাট্যব্যক্তিত্ব
অদ্ভুত মনস্তাত্বিক টানাপোড়েনের এই গল্প কখনো দিদি-ভাই কখনো বা নারী-পুরুষের চাওয়া-পাওয়ায় দোদুল্যমান। লেখিকার কলমের মুন্সিয়ানায় এই লেখা যেন অবিরত ভেসে চলে, মাটি ছোঁয় না। আগাগোড়া ক্লাসিক ধাঁচে লেখা আবহমান এক রূপকথা।
Show/hide complete review

অনেকদিন বাদে একটা তীব্র মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস পড়লাম। "সাগরবেলায় ঘর" - পুরো উপন্যাসটাই লেখা হয়েছে শ্রুতি ও সায়নের ব্যক্তিগত দিনলিপির আঙ্গিকে। দুই অসমবয়সী প্রেমীর রূপকথা। যেখানে মেয়েটি ছেলেটির থেকে সাতবছরের বড়। ছেলেটার 'প্রায় ভাই-ভাই' ভাব আর মেয়েটির 'প্রায় দিদিসুলভ' আচরণের মধ্য গড়ে ওঠে অব্যক্ত এক ভালোবাসা। দিনলিপির আদলে এক অদ্ভুত মজা থাকে। যেখানে ডায়রিতে লেখা কথা একান্ত নিজস্ব, কিন্তু পাঠকের কাছে পুরোটাই উন্মুক্ত। যেন নাটকের মঞ্চকুশীলবদের ফিসফিস করে কথা বলা। যা শুনতে পায় প্রেক্ষাগৃহের পিছনের শেষ সারিতে বসা দর্শকরাও। অদ্ভুত মনস্তাত্বিক টানাপোড়েনের এই গল্প কখনো দিদি-ভাই কখনো বা নারী-পুরুষের চাওয়া-পাওয়ায় দোদুল্যমান। লেখিকার লেখার মুন্সিয়ানায় এই লেখা যেন অবিরত ভেসে চলে, মাটি ছোঁয় না। ভালোবাসার এই কাহিনিতে কোনো তাড়াহুড়ো নেই। নেই কাহিনিতে মোচড় এনে পাঠককে চমকে দেওয়ার কোনো অভিপ্রায়। আগাগোড়া ক্লাসিক ধাঁচে লেখা আবহমান এক রূপকথা। ঠিক যেন, যেমন ছিল...তেমন আছে...এমনই চলবে। কুলুকুলু শব্দে বয়ে যাওয়া নদীর মতো। শান্ত, গতিময় কিন্তু সম্পর্কের চোরাস্রোত মাঝেমাঝেই এলোমেলো করে দেয় দুজনকেই। লেখিকা সেই দোলাচলকে নিখুঁতভাবে বুনেছেন পাতায় পাতায়। ভীষণভাবে দমবন্ধকরা, দুঃসাহসিক! কাহিনিতে অন্যান্য চরিত্ররা অতি স্বাভাবিকভাবে এসেছে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, অথবা শ্রুতি-সায়নের স্মৃতিতে। লেখিকা তাদের আলাদা করে পাঠককে চিনিয়ে চেষ্টা করেননি। কারণটা স্বাভাবিক। শ্রুতি বা সায়ন ডায়রি লিখছে, নিজের কথা লিখছে। সেখানে সব চরিত্ররা তাদের নিজেদের চেনা মানুষ। এই কারণেই উপন্যাস এক অন্যমাত্রায় পৌঁছে যায়। শ্রুতি বা সায়ন, কার ডায়রির পাতা পাঠক পড়ছে সেটা বুঝে নিতে হয় দিনলিপির শুরুতে থাকা অলংকরণ দেখে। এখানেও লেখিকার ভাবনার কৌশলী প্র‍য়োগ প্রশংসার দাবী রাখে। সায়নের ডায়রি লেখা হালকা, আপাত অগভীর, মজাদার। অন্যদিকে শ্রুতির ভাষায় অনন্য শব্দবন্ধ চমকে দেয়। গম্ভীর পুরনো আর হালকা নতুন শব্দের ব্যবহার মনের অন্তস্তলকে নাড়া দেয়। শুরুতেই বলেছি, বহমান এই উপন্যাসের পরিণতি নেই। গল্প ভাসতে ভাসতে একসময় পাঠককে অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে হঠাৎ শেষ হয়ে যায়। শেষ কিছু পৃষ্ঠায় শ্রুতি-সায়ন তাদের দিনলিপিতে রাজকন্যা-রাজপুত্র থেকে বাস্তবের সাধারণ নারী-পুরুষ হয়ে গেল। কিছুটা স্বপ্নভঙ্গ হলেও জীবন এমনিই তো হয়! তবুও মনে হচ্ছে, শেষ কি আরো একটু শক্তিশালী হতে পারত না? নাকি লেখিকা সেটাই চেয়েছেন? হন্ট করছে... এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার উপন্যাস এটা নয়, আমার মতে। ভারি জটিল, টালমাটাল, টানাপোড়েন... লেখিকাকে কুর্ণিশ। এমন একটি ক্লাসিক উপহার দেবার জন্য। এমন সোনার কলম বাংলা সাহিত্যকে ধন্য করুক। অনেকদিন উপন্যাস পড়া ছেড়ে দিয়েছিলাম। ক্রমাগত থোড় বড়িখাড়া... ইত্যাদি পড়তে পড়তে বীতশ্রদ্ধ হয়ে। নতুন করে আবার বাংলা উপন্যাস পড়ার ইচ্ছা জাগালো এই লেখা। মনের মধ্যে চিরদিনের জন্য অন্তরীন হয়ে রইল কিছু ভালো লাগা। পুনশ্চ- সায়ন বাঁহাতি আর শ্রুতি ডানহাতি, এটা শুধু বোঝা গেছে অলংকরণে। উপন্যাসে কোথাও উল্লেখ নেই। 🙂 শুভেচ্ছাসহ, অক্ষয় দাস

অক্ষয় দাস
লেখক
গল্পের মধ্যে ডুব দিয়ে চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেকে এবং আমার আশপাশের মানুষজনদের খুঁজে পেয়েছি। এক নিশ্বাসে পড়তে পড়তে গল্পের শেষে পৌঁছে মনে হয়েছে, শেষটা ঠিক এরকমই expect করছিলাম। কিন্তু গল্পের রেশটা যেন রয়েই গেল। তাই 'সাগরবেলার ঘর' - এর দ্বিতীয় পর্ব পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম।
Show/hide complete review

গত কয়েকদিন ধরে ব্রাইটন ঘুরে সবেমাত্র কলকাতা ফিরেছি। ওখানকার দোকান - বাজার, সমুদ্রতট সবই চিনে গেছি এখন। চার ঘন্টায় ট্রেনে চড়ে লন্ডনে গিয়ে শহর ঘোরা, আর অপেরাও বাদ যায়নি। সমুদ্রের হাওয়া, সোনালী রোদের আনাগোনায় মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠেছিল। না না সত্যিই ব্রাইটন যাইনি, প্রিয়াঙ্কা ঘোষের ইংল্যান্ডের পটভূমিকায় লেখা উপন্যাস, ‘সাগরবেলার ঘর’ পড়তে পড়তে মনে মনে পৌঁছে গিয়েছিলাম সাগরপারের দেশে। এখন আমার কিছু ভালোমন্দের অনুভূতি শেয়ার করছি আপনাদের সঙ্গে। গল্পের মধ্যে ডুব দিয়ে চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেকে এবং আমার আশপাশের মানুষজনদের খুঁজে পেয়েছি। কখনো নিজেকে সায়ন ভেবে শ্রুতির স্নেহ শাসন উপভোগ করেছি। আবার কখনো নিজেকে শ্রুতি ভেবে সায়নের খুনসুটি বেশ লেগেছে। এক নিশ্বাসে পড়তে পড়তে গল্পের শেষে পৌঁছে মনে হয়েছে, শেষটা ঠিক এরকমই expect করছিলাম। কিন্তু গল্পের রেশটা যেন রয়েই গেল। তাই 'সাগরবেলার ঘর' - এর দ্বিতীয় পর্ব পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম এবার আমার কিছু ভালো না লাগা বা অসামঞ্জস্য, যা আমার চোখে পড়েছে সেই প্রসঙ্গে আসি। * ৭৫ পৃষ্ঠায় সায়নকে 'ওই রং চং মাখা মেয়েদের' সঙ্গে তুলনাটা ভালো লাগেনি। * অরিদীপ সরকারী চাকুরে। কোন সরকারী চাকুরেকে অফিসের কাজে আমেরিকা যেতে হয়? * শ্রুতি CA অনেকটা পরে জানলাম, গল্পের শুরুতে মনে হয়েছিল B. Tech / MBA. সবমিলিয়ে উপন্যাস একই আগ্রহে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছি। খুব ভালো লেগেছে

নীতা দে
প্রধান শিক্ষিকা
“সাগরবেলার ঘর"-এ প্রবেশ করে খুঁজে পেলাম এক নতুন লেখিকাকে। বাস্তব আর কল্পনার মিশেলে সে খুব সুন্দর সাজিয়েছে ঘরটাকে। লেখিকাকে অনুরোধ, কলমের মুখে আর লাগাম পরিয়ে না রেখে ওকে ছুটতে দিক। "এখনও অনেক পথ চলার বাকি"।
Show/hide complete review

“সাগরবেলার ঘর"-এ প্রবেশ করে খুঁজে পেলাম এক নতুন লেখিকাকে। বাস্তব আর কল্পনার মিশেলে সে খুব সুন্দর সাজিয়েছে ঘরটাকে। প্রকৃতির বর্ণনায়, সঙ্গীত চয়নে ফুটে উঠেছে লেখিকার শিল্প শৈলী যা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। শ্রুতির নিজের গোচরে বা অগোচরে বারবার অতীতের নির্মম জালে জড়িয়ে পড়া, সায়নের ছেলেমানুষীর আড়ালে মুখ লুকিয়ে থাকা শিল্পীমন আর সবকিছু ছাপিয়ে ওদের অসমবয়সী প্রেমের দোলাচলের রোজনামচা উপন্যাসটাকে দিয়েছে এক অনন্য মাত্ৰা। উপন্যাসের সাজানো ঘরের আবছায়ায় অনেক পরিচিত মুখের সন্ধান পেলাম। লেখিকাকে অনুরোধ, কলমের মুখে আর লাগাম পরিয়ে না রেখে ওকে ছুটতে দিক। "এখনও অনেক পথ চলার বাকি"। আবার খুব শিগগিরই নতুন কোনও 'ঘর' - এ দেখা হবে এই প্রত্যাশায় রইলাম।

পৌলমী দেব
লেখিকা

About Us

A new age publishing house that promises to inspire and support creativity in budding writers.